সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পরিপত্রে তাদের নারী ও পুরুষ কর্মীদের পোশাকসংক্রান্ত একটি "শালীনতা নির্দেশনা" জারি করে। এতে বলা হয়েছিল, নারী কর্মীরা যেন খাটো হাতা, ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক ও লেগিংস পরিহার করেন এবং পুরুষ কর্মীরা যেন জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট না পরেন। এ নির্দেশনার প্রেক্ষিতে দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, যার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক শেষপর্যন্ত ওই পরামর্শ প্রত্যাহার করে নেয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অভিযোগ করেন এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। কেউ বলেন, “এটি একটি রক্ষণশীলতা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা”, আবার কেউ বলেন, “এই নির্দেশনা লিঙ্গ বৈষম্যমূলক”। সমালোচনার চাপে পড়ে ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর, যিনি বিদেশে অবস্থান করছিলেন, দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এই নির্দেশনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পরে জানায়, এটি ছিল একটি ‘পরামর্শ’, কোনও প্রকার বাধ্যবাধকতা নয়, এবং এটি এখন আর বলবৎ নেই।
আল-কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
"এবং মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহ হেফাজত করে এবং তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, যা সাধারণত প্রকাশ পায় না।"
(সূরা আন-নূর, ২৪:৩১)
আর পুরুষদের ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে:
"মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহ হেফাজত করে।"
(সূরা আন-নূর, ২৪:৩০)
সুতরাং, ইসলাম নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই শালীন ও মর্যাদাপূর্ণ পোশাক পরিধানকে ফরজ করেছে।
নারীদের জন্য এমন পোশাক আবশ্যক যা গা-ঢাকা, ঢিলেঢালা, এবং আকৃতি ফুটিয়ে তোলে না।
পুরুষদের পোশাকও শালীন হওয়া চাই, বিশেষ করে টাইট ফিটিং বা অশোভন স্টাইলের জিনিস পরিহার করতে বলা হয়েছে।
সালতানাতে বাংলা, যে নামের অধীনে একটি ইসলামী নেতৃত্ব ব্যবস্থা কল্পনা করা হচ্ছে, এই বিষয়ে
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক নির্দেশনার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে।
কারণ, শালীনতা
শুধু একটি সাংস্কৃতিক চর্চা নয়—এটি একটি কুরআনসিদ্ধ আদর্শ।
তবে, জনমতের চাপে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করাকে ইসলামী দৃষ্টিতে সঠিক পদক্ষেপ বলে মনে করে না সালতানাতে বাংলা। বরং, শরিয়াহ-সম্মত ও নৈতিক সিদ্ধান্তকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করাই উচিত ছিল।
গণতন্ত্রের মূলনীতি হল – "সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ"।
কিন্তু ইসলাম বলে –
"আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো আইন মানা হারাম।"
(সূরা আন-আম, ৬:১২১)
তাই, সালতানাতে বাংলা গণতন্ত্রকে বাতিলব্যবস্থা মনে করে এবং খিলাফাহভিত্তিক ইসলামী শাসনব্যবস্থাকেই একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ হিসেবে মানে, যেখানে সকল ক্ষমতার উৎস একমাত্র আল্লাহ্।
ইসলামে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত, তবে ন্যায়ের বিরুদ্ধেও যদি আবেগতাড়িতভাবে সমালোচনা হয়, সেটা গোমরাহী ও উসকানি হিসেবেই গণ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা যদি শরীয়াহর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, তবে তা নিয়ে এই ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা ইসলামী আদর্শবিরোধী।
নারী | পুরুষ |
পুরো শরীর আবৃত | নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢাকা |
ঢিলেঢালা, স্বচ্ছ নয় | টাইট বা অশোভন নয় |
আকৃতি প্রকাশ করে না | মার্জিত ও পরিচ্ছন্ন |
সালতানাতে বাংলার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হচ্ছে যে—
👉🏼
ইসলামী আদর্শে পরিচালিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় শালীনতা রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রেরই।
👉🏼 বাংলাদেশ
ব্যাংকের প্রাথমিক নির্দেশনা কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে যথাযথ ছিল।
👉🏼 জনমতের চাপে ধর্মীয়
নীতিমালা থেকে সরে আসা কাম্য নয়।
👉🏼 গণতন্ত্র নয়—আল্লাহর সার্বভৌমত্বভিত্তিক ইসলামী
খিলাফাহই সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান।
কোনো মন্তব্য নেই।